বর্তমান যুগে প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে অনলাইনে অর্থ উপার্জনের সুযোগ অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা ঘরে বসে অতিরিক্ত উপার্জন করতে চান। শিক্ষার্থী, গৃহিণী, চাকরিজীবী কিংবা উদ্যোক্তা—সবাই চাইলে এখন মোবাইলে অনলাইন ইনকাম অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইনে আয় করতে পারেন। এর জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগেরও প্রয়োজন নেই।
শুধু একটি স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই আপনি সহজেই বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে অর্থ উপার্জন শুরু করতে পারেন।
এই আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশে জনপ্রিয় ৩০টি অনলাইন ইনকাম অ্যাপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, যা আপনাকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করবে।
ফাইভার (Fiverr): দক্ষতা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে কাজ
ফাইভার হলো একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজের সুযোগ পেতে পারেন।

Design, Writing, Video Editing, Web Development, Digital Marketing সহ বিভিন্ন কাজের জন্য ফাইভার বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশে অনেক তরুণ এই প্ল্যাটফর্ম থেকে ভালো আয় করছেন।
ফাইভারে কাজ শুরু করতে প্রথমে একটি আকর্ষণীয় প্রোফাইল তৈরি করতে হবে।
এরপর আপনাকে আপনার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে “গিগ” (Gig) তৈরি করতে হবে। গিগ হলো এমন একটি সার্ভিস যা আপনি ক্লায়েন্টদের প্রদান করবেন।
গিগে ভালো রেটিং ও রিভিউ থাকলে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
একবার কোনো ক্লায়েন্ট আপনার কাজ পছন্দ করলে, ভবিষ্যতে তারা আপনাকে নিয়মিত কাজ দিতে পারে।
ফাইভারের আরেকটি বড় সুবিধা হলো, এখানে আপনি নিজের সময় অনুযায়ী কাজ করতে পারেন। যদি আপনার হাতে সময় কম থাকে, তাহলে ছোট ছোট কাজ বেছে নিতে পারেন।
আবার সময় বেশি থাকলে বড় প্রজেক্টে কাজ করতে পারেন। তাই, যারা অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের জন্য ফাইভার হতে পারে দারুণ একটি প্ল্যাটফর্ম।
আপওয়ার্ক (Upwork): বিশ্বব্যাপী ক্লায়েন্টদের জন্য কাজ
আপওয়ার্ক বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ অনলাইন ইনকাম অ্যাপ – এ কাজ করছেন।
আপনি যদি Web Development, Graphic Design, Content Writing, Digital Marketing, Virtual Assistance বা অন্য কোনো দক্ষতা নিয়ে কাজ করতে চান, তাহলে আপওয়ার্ক হতে পারে আপনার জন্য উপযুক্ত জায়গা।
আপওয়ার্কে কাজ শুরু করতে প্রথমে আপনাকে একটি প্রোফাইল তৈরি করতে হবে।
প্রোফাইলটি যতটা সম্ভব পেশাদার রাখতে হবে, কারণ ক্লায়েন্টরা আপনার প্রোফাইল দেখে আপনাকে কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রোফাইলে আপনার দক্ষতা, পূর্বের কাজের অভিজ্ঞতা এবং আপনার বিশেষত্ব তুলে ধরতে হবে।
আপওয়ার্কে ক্লায়েন্টরা বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট পোস্ট করেন, যেখানে আপনি বিড (Bid) করতে পারেন।
বিড করার সময় আপনাকে ক্লায়েন্টকে বোঝাতে হবে কেন আপনি তাদের প্রজেক্টের জন্য উপযুক্ত।
একবার কাজ পেয়ে গেলে এবং ভালো রিভিউ পেলে, ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
বাংলাদেশের অনেক তরুণ আপওয়ার্ক থেকে মাসে হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করছেন।
তবে এখানে সফল হতে হলে ধৈর্য ধরতে হবে এবং প্রতিনিয়ত দক্ষতা উন্নয়নের চেষ্টা করতে হবে।
দারাজ অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম: পণ্য প্রচার করে আয়
অনলাইন শপিং এখন বাংলাদেশের মানুষের জন্য খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, এবং দারাজ হলো দেশের বৃহত্তম ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম।

দারাজ অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনি দারাজের পণ্য প্রচার করে কমিশনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
আপনি যদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় হন, ইউটিউব চ্যানেল বা ব্লগ পরিচালনা করেন, তাহলে দারাজ অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আপনার জন্য দারুণ সুযোগ তৈরি করতে পারে।
এখানে মূলত আপনাকে দারাজের বিভিন্ন পণ্যের অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করতে হবে।
কেউ যদি আপনার লিংকের মাধ্যমে কোনো পণ্য কিনে, তাহলে আপনি কমিশন পাবেন।
কাজ শুরু করতে প্রথমে আপনাকে দারাজ অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে নিবন্ধন করতে হবে।
এরপর আপনার জন্য একটি ইউনিক অ্যাফিলিয়েট লিংক তৈরি করা হবে, যা আপনি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ব্লগ বা ইউটিউবে শেয়ার করতে পারেন।
এটি প্যাসিভ আয়ের একটি চমৎকার উপায়, কারণ একবার আপনি যদি জনপ্রিয় কন্টেন্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে দীর্ঘ সময় ধরে আয় হতে থাকবে।
ইউটিউব (YouTube): ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ইনকাম
ইউটিউব বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন ইনকাম অ্যাপ প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে একটি।
বাংলাদেশেও অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইউটিউব থেকে লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন।
ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য প্রথমেই আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে।
এরপর আপনাকে দর্শকদের জন্য আকর্ষণীয় ও উপযোগী ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে হবে।
চ্যানেলে পর্যাপ্ত দর্শক এবং সাবস্ক্রাইবার হলে, আপনি গুগল অ্যাডসেন্স, স্পনসরশিপ, মেম্বারশিপ এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।
আরও পড়ুন…
- ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শিখব
- ই-কমার্স ব্যবসা ’র ১ম ধাপ: উদ্যোক্তাদের জন্য সঠিক গাইডলাইন! 🔑
- অনলাইনে আয় | মাসে ১০,০০০+ Income করার সহজ উপায় (২০২৫)
- ২০২৫ সালে ইনস্টাগ্রাম থেকে টাকা ইনকাম করার সেরা উপায়
বাংলাদেশে জনপ্রিয় কিছু ইউটিউব Niche হলো:
- প্রযুক্তি
- ভ্লগিং
- অনলাইন ইনকাম গাইড
- রেসিপি
- পড়াশোনার ভিডিও
- বিনোদন
আপনার চ্যানেল মনিটাইজ করার জন্য ইউটিউবের কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে, যেমন—১,০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪,০০০ ঘন্টা ওয়াচটাইম।
এটি অর্জন করতে হলে ধৈর্য ধরে মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করতে হবে।
টিকটক (TikTok): মজার ভিডিও বানিয়ে টাকা আয়
TikTok এখন বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়। শুধু বিনোদন নয়, এখানে অর্থ উপার্জনেরও সুযোগ রয়েছে।

টিক টক থেকে ইনকাম করার প্রধান উপায় হলো:
- ব্র্যান্ড স্পনসরশিপ: বড় ফলোয়ার থাকলে বিভিন্ন ব্র্যান্ড আপনাকে তাদের পণ্য প্রচারের জন্য পেমেন্ট দিতে পারে।
- লাইভ স্ট্রিমিং গিফট: আপনি যদি লাইভ স্ট্রিম করেন, তাহলে দর্শকরা আপনাকে ভার্চুয়াল গিফট পাঠাতে পারেন, যা পরে টাকা হিসেবে তোলা যায়।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: আপনি বিভিন্ন পণ্যের লিংক শেয়ার করে কমিশন পেতে পারেন।
তবে টিকটক থেকে ভালো ইনকাম করতে হলে আপনাকে ইউনিক এবং আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করতে হবে, যা দর্শকদের ভালো লাগবে। অনলাইন ইনকাম অ্যাপ হিসেবে টিকটক অন্যতম।
ফেসবুক ক্রিয়েটর স্টুডিও: ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে আয়
যারা ফেসবুক ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এটি দারুণ সুযোগ।
ফেসবুক ক্রিয়েটর স্টুডিওর মাধ্যমে আপনি ভিডিও আপলোড করে আয় করতে পারেন।
ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল, ইন-স্ট্রিম অ্যাডস এবং ব্র্যান্ড স্পনসরশিপের মাধ্যমে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
তবে আপনার পেজে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফলোয়ার এবং ভিডিও ওয়াচটাইম থাকতে হবে।
বাংলাদেশের অনেক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ফেসবুকে প্রচুর আয় করছেন।
আপনার যদি ভিডিও তৈরি করার দক্ষতা থাকে, তাহলে ফেসবুক হতে পারে আপনার জন্য লাভজনক প্ল্যাটফর্ম।
বিগো লাইভ (Bigo Live): লাইভ স্ট্রিম করে অর্থ উপার্জন
বিগো লাইভ বর্তমানে বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম।
এখানে আপনি লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে দর্শকদের কাছ থেকে উপহার (গিফট) পেতে পারেন, যা পরে টাকায় রূপান্তর করা যায়।
বিগো লাইভ থেকে অর্থ উপার্জন করার জন্য আপনাকে নিয়মিত আকর্ষণীয় লাইভ স্ট্রিম করতে হবে।
গান, নাচ, গেমিং, টক শো কিংবা বিনোদনমূলক কনটেন্টের মাধ্যমে আপনি দর্শকদের আকৃষ্ট করতে পারেন।
যখন দর্শকরা আপনার লাইভ পছন্দ করে, তখন তারা আপনাকে ভার্চুয়াল গিফট পাঠায়, যা বিগো পয়েন্টে রূপান্তরিত হয় এবং তা টাকা হিসেবে তোলা যায়।
তবে মনে রাখতে হবে, বিগো লাইভ থেকে আয় করতে হলে আপনাকে নিয়মিত এবং মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করতে হবে।
পাশাপাশি আপনাকে অ্যাপের নীতিমালা মেনে চলতে হবে, কারণ যেকোনো ভুলের কারণে আপনার অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ হতে পারে।
আরও পড়ুন…
- ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শিখব
- ই-কমার্স ব্যবসা ’র ১ম ধাপ: উদ্যোক্তাদের জন্য সঠিক গাইডলাইন! 🔑
- অনলাইনে আয় | মাসে ১০,০০০+ Income করার সহজ উপায় (২০২৫)
- ২০২৫ সালে ইনস্টাগ্রাম থেকে টাকা ইনকাম করার সেরা উপায়
গুগল ওপিনিয়ন রিওয়ার্ডস (Google Opinion Rewards): সহজে সার্ভে করে ইনকাম
যারা সহজ উপায়ে অল্প পরিশ্রমে অনলাইনে অর্থ উপার্জন করতে চান, তাদের জন্য গুগল ওপিনিয়ন রিওয়ার্ডস একটি ভালো অ্যাপ।
এখানে আপনাকে বিভিন্ন ছোট ছোট প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় এবং বিনিময়ে গুগল থেকে রিওয়ার্ড পান।
এই প্ল্যাটফর্ম থেকে মূলত গুগল প্লে ক্রেডিট আয় করা যায়, যা অ্যাপ কেনা, গেমসের মধ্যে ব্যবহার করা অথবা অন্যান্য ডিজিটাল কেনাকাটার জন্য কাজে লাগানো যায়।
যদিও সরাসরি নগদ টাকা পাওয়া যায় না, তবে যারা ডিজিটাল কেনাকাটা করেন, তাদের জন্য এটি বেশ কার্যকরী হতে পারে।
এটি খুব সহজ একটি পদ্ধতি, কারণ প্রতিদিন কয়েক মিনিট সময় দিলেই আপনি কিছু অতিরিক্ত ইনকাম করতে পারবেন।
বাংলাদেশে এটি বর্তমানে সীমিত আকারে কাজ করছে, তবে ভবিষ্যতে আরও সুযোগ আসতে পারে।
কর্মো জবস (Kormo Jobs): অনলাইন ও পার্ট-টাইম চাকরি
গুগল কর্মো জবস হলো এমন একটি অ্যাপ, যা বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

এটি গুগলের তৈরি একটি চাকরি খোঁজার প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ফ্রিল্যান্সিং, পার্ট-টাইম এবং ফুল-টাইম চাকরির সুযোগ পাওয়া যায়।
এখানে চাকরি পাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি প্রোফাইল তৈরি করতে হবে।
এরপর আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কাজের প্রস্তাব আসবে।
এটি বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো একটি সুযোগ, কারণ তারা পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে পারে।
কর্মো জবস অ্যাপে আপনি ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, কাস্টমার সার্ভিসসহ বিভিন্ন খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ পাবেন।
যারা অনলাইনে কাজ শুরু করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি ভালো অপশন হতে পারে।
রিমোট টাস্কস (Remotasks): ছোট ছোট অনলাইন কাজ করে অর্থ উপার্জন
রিমোটটাস্কস হলো এমন একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ছোট ছোট কাজ (microtasks) করে অর্থ উপার্জন করা যায়।
এই কাজগুলো সাধারণত ইমেজ লেবেলিং, ডাটা এন্ট্রি, টাইপিং, অডিও ট্রান্সক্রিপশন ইত্যাদির মতো হয়।
রিমোটটাস্কস-এ কাজ করতে হলে প্রথমে আপনাকে সাইন আপ করতে হবে এবং নির্দিষ্ট কিছু প্রশিক্ষণ (training) নিতে হবে।
একবার প্রশিক্ষণ শেষ হলে, আপনি সহজেই বিভিন্ন কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এই প্ল্যাটফর্মের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আপনি নিজের সুবিধামতো কাজ করতে পারেন।
যারা অনলাইনে ক্যারিয়ার শুরু করতে চান এবং বড় কোনো কাজ নেওয়ার আগে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান, তাদের জন্য এটি দারুণ একটি সুযোগ।
বাংলাদেশে অনলাইন ইনকামের ভবিষ্যৎ
বাংলাদেশে অনলাইন ইনকামের সুযোগ প্রতিদিনই বাড়ছে। এখন অনেক তরুণ ফ্রিল্যান্সিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ইউটিউব, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছেন।
সরকারও এখন তরুণদের ডিজিটাল স্কিল শেখানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে।
তাই এখনই সময় আপনার দক্ষতা বাড়িয়ে অনলাইনে ইনকাম শুরু করার।
এই আর্টিকেলে যেসব অ্যাপ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, সেগুলো ব্যবহার করে আপনি নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
তবে অনলাইনে সফল হতে হলে ধৈর্য ধরতে হবে, দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং নিয়মিত পরিশ্রম করতে হবে।
এখনই শুরু করুন এবং অনলাইনে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলুন!
রাকুটেন ইনসাইট (Rakuten Insight): সহজ সার্ভে পূরণ করে আয়
রাকুটেন ইনসাইট হলো একটি জনপ্রিয় সার্ভে প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনাকে বিভিন্ন বাজার গবেষণা (Market Research) সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। প্রতিটি সম্পন্ন করা সার্ভের জন্য আপনি পয়েন্ট পান, যা পরে নগদ অর্থ বা গিফট কার্ডে রূপান্তর করা যায়।

অনলাইনে ইনকামের ক্ষেত্রে সার্ভে সাইটগুলো সাধারণত কম ইনকাম দেয়, তবে এটি সহজ পদ্ধতি এবং সময় কম লাগে। যারা অতিরিক্ত সময়ে সামান্য উপার্জন করতে চান, তাদের জন্য এটি ভালো একটি উপায় হতে পারে।
বাংলাদেশে রাকুটেন ইনসাইট কাজ করে, তবে অনেক সময় নির্দিষ্ট অঞ্চলের জন্য সার্ভে পাওয়া কঠিন হতে পারে। তাই নিয়মিত লগইন করে নতুন সার্ভের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
ফোপ (Foap): মোবাইল ছবি বিক্রি করে ইনকাম
আপনার যদি ফটোগ্রাফি করার শখ থাকে, তাহলে ফোপ (Foap) অ্যাপটি ব্যবহার করে সহজেই মোবাইলের তোলা ছবি বিক্রি করতে পারেন। এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বড় বড় ব্র্যান্ড ও সংস্থাগুলো নতুন ও ইউনিক ছবির জন্য ক্রয় করে থাকে।
ফোপ ব্যবহার করে ইনকাম করতে হলে আপনাকে ভালো মানের ছবি আপলোড করতে হবে। যদি কোনো কোম্পানি বা ব্যক্তি আপনার ছবি কিনে নেয়, তাহলে আপনি প্রতিটি বিক্রিত ছবির জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাবেন।
বাংলাদেশের অনেক তরুণ ফটোগ্রাফার এই প্ল্যাটফর্ম থেকে আয় করছেন। এটি বিশেষ করে তাদের জন্য উপকারী, যারা পেশাদার ক্যামেরা ছাড়াই ভালো ছবি তুলতে পারেন।
সুইটকয়েন (Sweatcoin): হাঁটাহাঁটি করে অর্থ উপার্জন
আপনি কি জানেন হাঁটাহাঁটি করেও অর্থ উপার্জন করা যায়? সুইটকয়েন (Sweatcoin) হলো এমন একটি অনলাইন ইনকাম অ্যাপ, যা ব্যবহারকারীদের হাঁটার বিনিময়ে রিওয়ার্ড দেয়।
প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ হাঁটার পর আপনি সুইটকয়েন পাবেন, যা পরে বিভিন্ন পণ্য বা গিফট কার্ড কেনার জন্য ব্যবহার করা যায়।
এই প্ল্যাটফর্মটি স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তিদের জন্য দারুণ একটি উপায় হতে পারে, কারণ এটি মানুষকে হাঁটাহাঁটির প্রতি অনুপ্রাণিত করে এবং সেইসঙ্গে কিছু অতিরিক্ত ইনকামের সুযোগ দেয়।
যদিও সরাসরি ক্যাশ টাকা পাওয়া যায় না, তবে এটি একটি ভালো প্যাসিভ ইনকামের মাধ্যম হতে পারে।
স্কিলশেয়ার (Skillshare): দক্ষতা শেয়ার করে টাকা আয়
আপনার যদি পড়ানোর দক্ষতা থাকে, তাহলে স্কিলশেয়ার (Skillshare) একটি দারুণ সুযোগ। এটি একটি অনলাইন শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে কোর্স তৈরি করে এবং অন্যরা সেই কোর্স থেকে শিখতে পারে।
স্কিলশেয়ার থেকে আয় করার জন্য আপনাকে একটি শিক্ষামূলক ভিডিও কোর্স তৈরি করতে হবে। এরপর যখন শিক্ষার্থীরা আপনার কোর্স দেখবে, তখন আপনি কমিশন পাবেন।
এটি প্যাসিভ ইনকামের একটি দারুণ মাধ্যম, কারণ একবার কোর্স তৈরি করলে এটি দীর্ঘদিন পর্যন্ত আপনাকে আয় এনে দিতে পারে।
যারা ফ্রিল্যান্সিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ফটোগ্রাফি, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষ, তারা সহজেই স্কিলশেয়ার থেকে ভালো আয় করতে পারেন।
আর্নকরো (EarnKaro): অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম
আর্নকারো (EarnKaro) হলো একটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম, যা বিশেষভাবে সহজলভ্য। এখানে আপনাকে বিভিন্ন ই-কমার্স ও অনলাইন শপের প্রোডাক্টের লিংক শেয়ার করতে হবে।
যখন কেউ আপনার লিংকের মাধ্যমে কোনো পণ্য ক্রয় করবে, তখন আপনি কমিশন পাবেন।
এই প্ল্যাটফর্মের সবচেয়ে ভালো দিক হলো, এটি ব্যবহার করা একেবারেই সহজ এবং বিনিয়োগের কোনো প্রয়োজন নেই।
বিশেষ করে যাদের ফেসবুক গ্রুপ, ইনস্টাগ্রাম পেজ, ইউটিউব চ্যানেল বা ব্লগ রয়েছে, তারা সহজেই আর্নকারো ব্যবহার করে ইনকাম করতে পারেন।
ক্লিকওয়ার্কার (Clickworker): ছোট ছোট কাজ করে অর্থ উপার্জন
ক্লিকওয়ার্কার (Clickworker) হলো এমন একটি মাইক্রো-জব প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ছোট ছোট কাজ করে অর্থ উপার্জন করা যায়।
এখানে কাজের ধরনগুলো সাধারণত সহজ হয়, যেমন—
- ডাটা এন্ট্রি
- ওয়েব রিসার্চ
- কন্টেন্ট রাইটিং
- অডিও ট্রান্সক্রিপশন
যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ের জগতে নতুন, তারা ক্লিকওয়ার্কার ব্যবহার করে অনলাইনে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন এবং একই সঙ্গে কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
শিখো (Shikho): অনলাইন পড়িয়ে আয়
শিখো (Shikho) হলো বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম। এটি শিক্ষকদের জন্য দারুণ একটি সুযোগ, কারণ এখানে আপনি বিভিন্ন বিষয়ে অনলাইন কোর্স তৈরি করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
যারা গণিত, ইংরেজি, বিজ্ঞানের মতো বিষয় পড়াতে পারেন, তারা সহজেই শিখোতে শিক্ষক হয়ে অনলাইনে ছাত্রদের পড়াতে পারেন এবং ভালো আয় করতে পারেন।
অ্যামাজন এমটুর্ক (Amazon MTurk): ছোট ছোট কাজ করে আয়
অ্যামাজন এমটুর্ক (Amazon Mechanical Turk) হলো মাইক্রো-টাস্ক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিভিন্ন ছোট ছোট কাজ করতে হয়।
এখানে কাজগুলো সাধারণত সহজ, যেমন—
- অডিও ট্রান্সক্রিপশন
- সার্ভে পূরণ
- ইমেজ লেবেলিং
- ডাটা এন্ট্রি
এই প্ল্যাটফর্মে যারা ধৈর্য ধরে কাজ করতে পারেন, তারা মাসে ভালো পরিমাণ আয় করতে পারেন। এটি অনলাইন ইনকাম অ্যাপ হিসেবে খুবই জনপ্রিয়।
ফিল্ড এজেন্ট (Field Agent): রিয়েল-ওয়ার্ল্ড কাজ করে অর্থ উপার্জন
ফিল্ড এজেন্ট হলো এমন একটি অনলাইন ইনকাম অ্যাপ, যেখানে আপনাকে দোকানে গিয়ে ছবি তোলা, পণ্যের তথ্য সংগ্রহ করা এবং ছোট ছোট টাস্ক সম্পন্ন করতে হয়। প্রতিটি কাজের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়।
এটি বাংলাদেশে সীমিতভাবে কাজ করে, তবে যারা মার্কেটিং বা রিসার্চের কাজ করতে চান, তাদের জন্য এটি ভালো একটি প্ল্যাটফর্ম।
আরও পড়ুন…
- ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শিখব
- ই-কমার্স ব্যবসা ’র ১ম ধাপ: উদ্যোক্তাদের জন্য সঠিক গাইডলাইন! 🔑
- অনলাইনে আয় | মাসে ১০,০০০+ Income করার সহজ উপায় (২০২৫)
- ২০২৫ সালে ইনস্টাগ্রাম থেকে টাকা ইনকাম করার সেরা উপায়
এয়ারবিএনবি এক্সপেরিয়েন্সেস (Airbnb Experiences): অনলাইন ট্যুর গাইড হয়ে আয়
এয়ারবিএনবি এক্সপেরিয়েন্সেস এমন একটি সুযোগ, যেখানে আপনি ভার্চুয়াল বা সরাসরি ট্যুর গাইড হিসেবে কাজ করতে পারেন।
যারা ভ্রমণ ভালোবাসেন বা স্থানীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে জানেন, তারা এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সহজেই অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
ট্রিভাগো (Trivago): হোটেল রিভিউ লিখে অর্থ উপার্জন
ট্রিভাগো (Trivago) হলো একটি জনপ্রিয় অনলাইন হোটেল বুকিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ব্যবহারকারীরা হোটেল সার্চ করে এবং সেরা দামে বুক করতে পারে।

তবে অনেকেই জানেন না যে, ট্রিভাগো ব্যবহার করে হোটেল রিভিউ লিখেও অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
আপনি যদি ভ্রমণপিপাসু হন এবং বিভিন্ন হোটেলে থাকার অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে এই প্ল্যাটফর্মে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে আয় করতে পারেন।
ট্রিভাগো হোটেল রিভিউর জন্য কন্ট্রিবিউটরদের অর্থ প্রদান করে এবং বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে কমিশন উপার্জনের সুযোগও দেয়।
এছাড়া, আপনি যদি নিজস্ব ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করেন, তাহলে ট্রিভাগোর অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে হোটেল বুকিং লিংক শেয়ার করতে পারেন।
যখন কেউ আপনার লিংক ব্যবহার করে হোটেল বুক করবে, তখন আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাবেন।
যারা ফ্রিল্যান্সিং বা ব্লগিংয়ে নতুন, তারা ট্রিভাগোতে রিভিউ লেখা শুরু করতে পারেন এবং পর্যায়ক্রমে আরও বড় প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে পারেন। এই কাজের জন্য ভালো লেখার দক্ষতা এবং পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা প্রয়োজন।
পোগো (Pogo): ডাটা শেয়ার করে অর্থ উপার্জন
পোগো (Pogo) হলো এমন একটি অনলাইন ইনকাম অ্যাপ, যা ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট কিছু তথ্য শেয়ার করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের সুযোগ দেয়।
এটি মূলত একটি ডাটা-ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ইউজারদের অ্যাপ ব্যবহারের ধরন, লোকেশন ডাটা এবং কেনাকাটার অভ্যাস বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিনিময়ে তাদের পয়েন্ট বা ক্যাশ রিওয়ার্ড দেওয়া হয়।
এই প্ল্যাটফর্ম থেকে অর্থ উপার্জন করতে হলে আপনাকে অ্যাপটি ডাউনলোড করে আপনার অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক করতে হবে।
এরপর অ্যাপটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট কিছু ডাটা সংগ্রহ করবে এবং আপনাকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ পয়েন্ট দেবে। এই পয়েন্ট পরে নগদ অর্থে রূপান্তরিত করা যায়।
তবে, যেহেতু এটি ব্যক্তিগত ডাটা সংগ্রহ করে, তাই ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা নীতিমালা সম্পর্কে ভালোভাবে পড়া উচিত।
যদি আপনি আপনার তথ্য শেয়ার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তাহলে এটি একটি সহজ উপায় হতে পারে কিছু অতিরিক্ত উপার্জন করার জন্য।
হানিগেইন (Honeygain): ইন্টারনেট শেয়ার করে অর্থ উপার্জন
হানিগেইন (Honeygain) হলো এমন একটি অনলাইন ইনকাম অ্যাপ, যা ব্যবহারকারীদের অব্যবহৃত ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ শেয়ার করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের সুযোগ দেয়।
এটি মূলত একটি প্যাসিভ ইনকামের মাধ্যম, কারণ এখানে আপনাকে কোনো অতিরিক্ত কাজ করতে হয় না।
এই প্ল্যাটফর্মে কাজ শুরু করার জন্য প্রথমেই আপনাকে অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে এবং একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
এরপর অ্যাপটি আপনার অব্যবহৃত ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করবে এবং বিনিময়ে আপনাকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ পয়েন্ট দেবে।
পয়েন্ট সংগ্রহ হয়ে গেলে, সেগুলো নগদ অর্থে পরিণত করা যায়।
হানিগেইন মূলত গবেষণা ও বিশ্লেষণমূলক সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করে এবং তাদের জন্য নিরাপদভাবে ডাটা সংগ্রহ করে।
তবে অনেক ব্যবহারকারী গোপনীয়তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন, তাই এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার আগে তার নীতিমালা ভালোভাবে পড়া উচিত।
বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ তুলনামূলক সস্তা হওয়ায় এটি একটি ভালো প্যাসিভ ইনকামের মাধ্যম হতে পারে। তবে এই প্ল্যাটফর্ম থেকে বড় অঙ্কের টাকা উপার্জন করা সম্ভব নয়, এটি শুধুমাত্র অতিরিক্ত কিছু ইনকামের সুযোগ দেয়।
টাস্করাবিট (TaskRabbit): ছোট ছোট অনলাইন ও অফলাইন কাজ করে আয়
টাস্কারাবিট (TaskRabbit) হলো একটি ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ব্যবহারকারীরা ছোট ছোট কাজের জন্য অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
এটি মূলত লোকাল সার্ভিসভিত্তিক একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনি অনলাইন এবং অফলাইন উভয় ধরনের কাজ পেতে পারেন।

এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে যেসব কাজ করা যায়, তার মধ্যে রয়েছে—
- বাড়ির মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ
- কেনাকাটা ও ডেলিভারি
- ফার্নিচার অ্যাসেম্বলিং
- ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট
- অনলাইন ডাটা এন্ট্রি ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স
টাস্কারাবিট বাংলাদেশে সীমিতভাবে কাজ করে, তবে এটি আন্তর্জাতিকভাবে অনেক জনপ্রিয়।
যদি আপনি অনলাইন বা লোকাল ফ্রিল্যান্সিং-এ কাজ করতে আগ্রহী হন, তাহলে এটি একটি ভালো প্ল্যাটফর্ম হতে পারে।
জ্যাপার (Zappar): অগমেন্টেড রিয়েলিটি (AR) কনটেন্ট তৈরি করে আয়
জ্যাপার (Zappar) হলো একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ব্যবহারকারীরা অগমেন্টেড রিয়েলিটি (AR) কনটেন্ট তৈরি করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
এই প্ল্যাটফর্মে কাজ শুরু করতে হলে আপনাকে AR ডিজাইন শিখতে হবে এবং জ্যাপার টুল ব্যবহার করতে হবে।
আপনি বিভিন্ন কোম্পানির জন্য কাস্টমাইজড AR বিজ্ঞাপন, ইন্টারঅ্যাক্টিভ পোস্টার, গেমস এবং ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন।
বর্তমানে AR প্রযুক্তির চাহিদা বাড়ছে, বিশেষ করে মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিং ক্ষেত্রে। তাই যদি আপনি নতুন কিছু শিখতে এবং ভবিষ্যতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়াতে চান, তাহলে জ্যাপার একটি দারুণ সুযোগ হতে পারে।
টুরো (Turo): আপনার গাড়ি ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জন
আপনার যদি ব্যক্তিগত গাড়ি থাকে এবং সেটি সব সময় ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না, তাহলে টুরো (Turo) অ্যাপের মাধ্যমে সেটি ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
এটি মূলত গাড়ি শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ব্যবহারকারীরা তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়া দিতে পারেন।
এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার জন্য আপনাকে প্রথমে নিজের গাড়ির প্রোফাইল তৈরি করতে হবে, যেখানে গাড়ির বিবরণ ও ছবি আপলোড করতে হবে।
এরপর আগ্রহী ব্যবহারকারীরা আপনার গাড়ি ভাড়া নিতে পারবে এবং আপনি এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
বাংলাদেশে টুরো এখনও ততটা জনপ্রিয় নয়, তবে গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ধারণাটি এখানে বেশ কার্যকর হতে পারে।
বিশেষ করে ঢাকার মতো শহরে, যেখানে অনেক মানুষ স্বল্প সময়ের জন্য গাড়ি ভাড়া নিতে চায়।
শাটারস্টক (Shutterstock): ছবি, ভিডিও বা ডিজিটাল কনটেন্ট বিক্রি করে আয়
শাটারস্টক (Shutterstock) হলো বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় স্টক ফটো ও ভিডিও বিক্রির প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ফটোগ্রাফার, গ্রাফিক ডিজাইনার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটররা তাদের কাজ বিক্রি করতে পারেন।
আপনার যদি ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি বা ডিজিটাল আর্ট তৈরির দক্ষতা থাকে, তাহলে শাটারস্টকে আপনার কাজ আপলোড করে আয় করতে পারেন।

যখন কেউ আপনার আপলোড করা ছবি বা ভিডিও ডাউনলোড করবে, তখন আপনি কমিশন পাবেন।
এই প্ল্যাটফর্ম থেকে ভালো উপার্জন করতে হলে আপনাকে ক্রিয়েটিভ এবং ইউনিক কনটেন্ট তৈরি করতে হবে, যা বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও মিডিয়া সংস্থার চাহিদা মেটাতে পারে।
আরও পড়ুন…
- ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শিখব
- ই-কমার্স ব্যবসা ’র ১ম ধাপ: উদ্যোক্তাদের জন্য সঠিক গাইডলাইন! 🔑
- অনলাইনে আয় | মাসে ১০,০০০+ Income করার সহজ উপায় (২০২৫)
- ২০২৫ সালে ইনস্টাগ্রাম থেকে টাকা ইনকাম করার সেরা উপায়
ড্রপশিপিং অ্যাপস: অনলাইন ব্যবসা করে ইনকাম
ড্রপশিপিং হলো এমন একটি ই-কমার্স ব্যবসার মডেল, যেখানে আপনাকে নিজের পণ্য মজুত করতে হয় না।
এখানে আপনি একটি অনলাইন স্টোর তৈরি করবেন এবং তৃতীয় পক্ষের সরবরাহকারীর কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহ করে বিক্রি করবেন।
ড্রপশিপিং করতে জনপ্রিয় কয়েকটি অ্যাপ হল—
- Shopify
- Oberlo
- AliExpress Dropshipping
এই ব্যবসার মূল সুবিধা হলো, আপনাকে স্টক মেইনটেইন করতে হয় না এবং সরাসরি কাস্টমারের কাছে পণ্য পাঠানোর দায়িত্ব সরবরাহকারীর থাকে।
তবে সফল হতে হলে ভালো মার্কেটিং কৌশল জানতে হবে এবং ট্রেন্ডিং প্রোডাক্ট সিলেক্ট করতে হবে।
কোরা পার্টনার প্রোগ্রাম (Quora Partner Program): প্রশ্নের উত্তর লিখে ইনকাম
কোরা (Quora) হলো একটি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য শেয়ার করে।
কোরার পার্টনার প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন, যদি আপনার উত্তরগুলো বেশি সংখ্যক দর্শক পড়ে।
এই প্রোগ্রামে অংশ নিতে হলে আপনাকে কোরার নিয়ম মেনে অর্থপূর্ণ ও বিস্তারিত উত্তর লিখতে হবে। আপনি যদি লিখতে পছন্দ করেন এবং নতুন কিছু শিখতে ভালোবাসেন, তাহলে এটি একটি ভালো প্যাসিভ ইনকাম সোর্স হতে পারে।
বিক্রয় ডটকম (Bikroy.com): স্থানীয়ভাবে পণ্য ও পরিষেবা বিক্রি
নতুন পণ্য বিক্রি করতে পারেন, পাশাপাশি সার্ভিস অফার করেও ইনকাম করতে পারেন।
আপনি যদি কোনো পণ্য বিক্রি করতে চান, তাহলে বিক্রয় ডটকমে অ্যাড পোস্ট করতে পারেন। যখন কেউ আপনার পণ্য কিনবে, তখন আপনি সরাসরি লেনদেন করতে পারবেন।
এটি বিশেষ করে তাদের জন্য ভালো, যারা নিজের ব্যবসা বাড়াতে চান বা পুরাতন জিনিস বিক্রি করে কিছু অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করতে চান।
আমাদের শেষ কথা
বর্তমান যুগে অনলাইনে টাকা আয় করা আর কল্পনার বিষয় নয়, বরং এটি একটি বাস্তব এবং কার্যকর উপায় হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশে থাকা যে কেউ, চাইলেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সহজেই উপার্জন শুরু করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, মাইক্রো টাস্ক, এবং সার্ভে কমপ্লিট করার মতো অসংখ্য মাধ্যম এখন সবার হাতের মুঠোয়।
এই ব্লগে আলোচিত ৩০টি অনলাইন ইনকাম অ্যাপ আপনাকে আয়ের দুনিয়ায় প্রবেশের পথ দেখাবে। যদি আপনি দক্ষতা বাড়িয়ে নেন এবং নিয়মিত কাজ করেন, তবে অল্প সময়ের মধ্যেই ভালো উপার্জন করা সম্ভব।
তবে, অনলাইনে আয় করতে গেলে ধৈর্য এবং পরিশ্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমদিকে হয়তো ছোট ছোট ইনকাম হবে, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা বাড়লে আয়ের পরিমাণও বাড়বে।
একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে—সব ইনকামিং অ্যাপ নিরাপদ নয়। প্রতারণামূলক বা স্ক্যাম অ্যাপ থেকে দূরে থাকতে হবে এবং শুধুমাত্র বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্মেই কাজ করতে হবে। এজন্য আগে রিসার্চ করে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সঠিক অ্যাপ বেছে নিয়ে কাজ শুরু করুন এবং ধাপে ধাপে অনলাইন আয়ের জগতে এগিয়ে যান। আজ থেকেই চেষ্টা শুরু করুন এবং নিজের ফিনান্সিয়াল ফ্রিডমের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যান!
মাশাল্লাহ ভাইয়া অসাধারণ
❤️❤️❤️
I blog frequently and I seriously thank you for your content.
The article has really peaked my interest. I will book mark
your blog and keep checking for new information about once per week.
I subscribed to your RSS feed too.